বছরের জনপ্রিয় সঙ্গানুষঙ্গ বেসবল ক্যাপ
বছরকার শেষ সিজনের প্রতিটি ফ্যাশন শোতে ছিল বেসবল ক্যাপের ছড়াছড়ি।সুয়েড, লেদার আর টেক্সচারড ক্লদিংয়ে তৈরি একেকটি ক্যাপের প্রিন্ট এবং প্যাটার্নেও লক্ষণীয় ছিল বৈচিত্র্য। শ্যানেল, আলেকজান্ডার ওয়াং থেকে নিয়ে ভিভিয়েন ওয়েস্টউডের এবারকার কালেকশনে বেসবল ক্যাপের উপস্থিতি নজর কেড়েছে সবার।
কোনো কোনো ক্যাপে দেখা গেছে চেইন, প্লাস্টিক আর মেটালের এমবেলিশমেন্ট। কেউ কেউ সলিড কালারের বেসিক ডিজাইনের বেসবল ক্যাপেই মাতিয়েছেন মঞ্চ। স্ট্রেইট এবং ব্যাকওয়ার্ড ক্যাপ পরার দুই স্টাইলই চোখে পড়েছে এবার। যা জানান দিচ্ছে, আসছে বছরের পুরোটা সময়জুড়েই এর দাপট থাকবে।হরেক রকমের বেসবল ক্যাপ মিলবে বাজারে।
স্ট্যান্ডার্ড বেসবল ক্যাপ। অ্যাডজাস্টেবল নয়, তাই সঠিক সাইজ বুঝে তারপর কেনা উচিত ফিটেড ক্যাপ। মাপে সঠিক হলে খুব সুন্দরভাবে মাথায় বসে এটি। আর পেছনের অ্যাডজাস্টেবল স্ট্র্যাপ থাকে না বলে মাথায় ঢাউস আকৃতির দেখায় না। এর চাহিদা খেলাধুলায় নয়, ফ্যাশনেই বেশি।
নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় ফ্লেক্স ফিট এ বেসবল ক্যাপটি আবার ফিরেছে ট্রেন্ডে । ছোট, বড় ও মাঝারি- তিনটি সাইজে মিলবে বাজারে। পুরোপুরি অ্যাডজাস্টেবল নয়। তবে ক্যাপের পেছনের দিকে ইলাস্টিক ব্যান্ড থাকে, যা সামান্য স্ট্রেচেবল হওয়ায় মাথায় সুন্দরভাবে বসে যেতে সাহায্য করে। তবে সে ক্ষেত্রে ক্যাপটি অবশ্যই সঠিক মাপের হওয়া প্রয়োজন। পলি ওয়েভ স্প্যান্ডেক্সে তৈরি এসব ক্যাপ স্পোর্টস এবং ফ্যাশন উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়।
পেছনে ভেলক্সো কিংবা স্ন্যাপ স্টাইল স্ট্র্যাপ দেয়া থাকে অ্যাডজাস্টেবল ফিট ক্যাপগুলোতে। ফলে সহজেই মাথার মাপের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট কিংবা বড় করে নেয়া যায়। মেয়েদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বেশি, কারণ, এর ব্যাক ওপেনিং দিয়ে পনিটেইল বের করে রাখা সুবিধাজনক। ব্যবহারেও আরামদায়ক। বহুল ব্যবহৃত এ বেসবল ক্যাপগুলো দামেও তুলনামূলক সস্তা।
পঞ্চাশের দশকে খেলোয়াড়দের বরাতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ক্যাপগুলো। তবে ফিটেড ক্যাপের দাপটে খুব বেশি দিন টিকতে পারেনি স্ন্যাপ ব্যাকস। পরে আশির দশকে এর উপস্থিতি টের পাওয়া যায় আবার। তখনকার হিপহপ কালচারের সঙ্গে চমৎকার মানিয়ে নেয়ায় এটি উঠে আসে ক্যাপ ট্রেন্ডের শীর্ষে। পরবর্তী সময়ে শুধু হিপস্টারদের মধ্যেই নয়, এর চাহিদা বাড়ে সাধারণ্যে। নব্বইয়ের মধ্য সময় পর্যন্ত স্ট্রিট স্টাইল স্টেটমেন্ট কিংবা স্পোর্টি ওয়্যারের মূল অনুষঙ্গ ছিল স্ন্যাপ ব্যাক। ফখ লেদার, লেস, লাউড প্রিন্ট, স্টাড আর স্পাইকের এমবেলিশমেন্টে তৈরি এসব ক্যাপ এখনো সমান জনপ্রিয়। আর আজকাল তো ট্রপিক্যাল প্যাটার্ন, টাইডাই থেকে নিয়ে চমৎকার সব কার্টুন ক্যারেক্টার উঠে আসছে এগুলোতে। ফলে এ লিস্টেড সেলিব্রিটি থেকে নিয়ে টপ ফ্যাশন ব্লগাররা তো বটেই, সাধারণদের কাছেও স্টাইল স্টেটমেন্টের প্রধান একটি অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে স্ন্যাপ ব্যাকস।
দুটো টপ, দুটো সাইড আর একটা ফ্রন্ট প্যানেলের কম্বিনেশনে তৈরি হয় ফাইভ প্যানেল বেসবল ক্যাপ। শুরুতে শুধু সাইক্লিংয়ের সময় ব্যবহার করা হতো, ধীরে ধীরে ফ্যাশনে এর জনপ্রিয়তা বাড়ে। মূলত ম্যানসওয়্যার হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হলেও এখন মেয়েদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ফ্লোরাল, ট্রাইবাল, কালার ব্লক থেকে নিয়ে নটিক্যাল থিমে তৈরি একেকটি ফাইভ প্যানেল ক্যাপ ক্যাজুয়াল ফান লুক তৈরিতে অনবদ্য।
একসময় শুধু ট্রাক ড্রাইভাররা পরতেন,তবে এখন ফ্যাশন প্রেমীদের প্রিয় ট্রাকার ক্যাপ । মূলত স্ন্যাপ ব্যাক ধাঁচে তৈরি হলেও ম্যাশ প্যানেলে ব্যাকপার্ট এর মূল বৈশিষ্ট্য। যা দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। সঙ্গে দেয় পারফেক্ট ফিট।
রিহানা, কেন্ডেল জেনার, গিগি হাদিদ, ড্রেকের মতো রেড কার্পেট খ্যাত তারকা থেকে খোদ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ড্যাড স্টাইলকে নিয়ে এসেছেন লাইমলাইটে, ‘দ্য ড্যাড হ্যাট’ মাথায় দিয়ে। দেখাদেখি ফ্যাশনপ্রেমীরাও হরহামেশাই পরছেন এই বেসবল ক্যাপ। কার্ভড ব্রিমের এ ক্যাপগুলো সলিড রঙের। সাধারণত কটন কিংবা ক্যানভাসে তৈরি হয়ে থাকে। যা পরা হচ্ছে ক্যাজুয়াল থেকে নিয়ে ড্রেসড আপ লাইট লুকের সঙ্গে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন